রেকর্ড বৃষ্টিতে বানভাসি কলকাতা, মৃত ৮


পুজোর আনন্দে জল ঢাললো বৃষ্টি। সোমবার রাত থেকে লাগাতার বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতার একটা বড় অংশ। রাস্তার পাশাপাশি জল জমেছে রেল লাইনেও। ফলে যাতায়াত কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। যে গাড়িগুলো রাস্তায় রয়েছে তার ভাড়া আকাশছোঁয়া। এদিকে এই দুর্যোগের ফলে পুজোর বাজারেও যেতে পারছেন না ক্রেতারা। অন্যদিকে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবরও আসছে
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হলো ৮ জনের
ছুঁয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে একের পর এক মৃত্যুর খবর মিলেছে। জানা গিয়েছে একবালপুরের হোসেন শাহ রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের।
জীতেন্দ্র সিংহ নামে ৬০ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি ভোর ৫টা নাগাদ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। নেতাজিনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি ফলের দোকানি প্রশান্ত কুন্ডু'রও মৃত্যু হয়েছে একই কারণে। ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাসিন্দা অন্য দিনের মতো মঙ্গলবার সকালেও দোকান খুলতে গিয়েছিলেন। বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাতিস্তম্ভের গায়ে তাঁর সাইকেলটি হেলান দেওয়ার সময়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তারঁ মৃত্যু হয় তাঁর। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পাশাপাশি বেনিয়াপুকুর বেহালা, হরিদেবপুর, গড়িয়াহাট ও গড়ফাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার খবর মিলেছে
বৃষ্টিতে রেকর্ড কলকাতার
রাতভর বৃষ্টিতে কয়েক দশকের রেকর্ড ভাঙলো কলকাতা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ সেপ্টেম্বর থেকে রাত থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল পর্যন্ত যে বৃষ্টি হয়েছে। তাতে সেপ্টেম্বর মাসের বৃষ্টিতে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। সাতের দশক থেকে বিচার করলে সেপ্টেম্বরে এক রাতের বৃষ্টির পরিমাণে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এ দিনটি।
বাড়িতে থাকার পরামর্শ মহা নাগরিকের
এই দুর্যোগে শহরবাসীকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, "লকগেট খুলে দিলেও জল আবার ফেরত চলে আসছে। কলকাতাবাসী আজকের দিনটা অন্তত বাড়ি থেকে বেরোবেন না, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।"
এখনো পর্যন্ত যা খবর, সোনারপুরে টানা প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত জনজীবন। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে প্রায় ২৪৭ মিলিমিটার। এত বিপুল পরিমাণ বৃষ্টির জলে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জল নামানোর জন্য একাধিক জায়গায় পাম্প চালানো হলেও কিছু এলাকায় খালের জল উপচে পড়ায় পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। দুপুর ১২.৩০ পর্যন্ত পাম্প চলবে, তারপর জোয়ারের কারণে লকগেট বন্ধ রাখা হবে। প্রশাসনের দাবি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে। দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ।
বৃষ্টিতে বেহাল হাওড়া শহরও
রাতভর মুষলধারে বৃষ্টির ফলে হাওড়া শহরের জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত একভাবে প্রচুর পরিমাণে বৃস্টি হওয়ায় হাওড়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাস্ততম রোডগুলো জলমগ্ন হয়ে পড়ায় প্রায় বন্যার আকার ধারণ করে। বিশেষ করে জিটি রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, পঞ্চানন তলা রোড, নটবর পাল রোড, নরসিংহ দত্ত রোডের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। অন্যদিকে বেলগাছিয়া,কোনা, রামরাজাতলার হাল আরও খারাপ। বিশেষ করে কোনার পিয়ারা বাগান, ভুত বাগান, খালপাড় অঞ্চল প্রায় ভেসে যাওয়ার জোগাড়। দোকান বাজার খোলা নেই বললেই চলে। যানবাহন চলাচল খুবই কম।ঘরবন্দী মানুষজন খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাড়ির বাইরে নেই।
নারায়ণ রতন দত্ত, হাওড়া
Address
3721 2nd Street
Saltlake Sector V, Kolkata 700 091
Contacts
+91 98300 71925
Contract.subhendu.etv@gmail.com