কার্নিভালে কেনও? এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী

একদিকে যখন উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্নিভালে নাচ করছেন। ঢাক বাজাচ্ছেন। রেড রোডের এই চিত্র নিয়ে বিতর্ক হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। স্যোশাল মিডিয়াতেও উপচে পড়েছে মিম। একদিন পর তারই জবাব দিলেন তিনি। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাখ্যা করেন কেন তিনি রবিবার কলকাতায় দুর্গাপুজোর কার্নিভালে উপস্থিত ছিলেন

কী বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, “এটা অকারণে রাজনৈতিক রং দেওয়া হচ্ছে। কার্নিভাল বাংলার গর্ব। দেশ-বিদেশ থেকে বহু অতিথি আসেন এই অনুষ্ঠানে। সমস্ত ক্লাব অপেক্ষা করে এই দিনের জন্য। আর রবিবার সন্ধ্যাবেলা উত্তরবঙ্গে গিয়ে আমরা কী করতে পারতাম? তখন কি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত উদ্ধার কাজকে, না কি ভিআইপিদের নিরাপত্তা দেওয়াকে?”

বিজেপিকে কটাক্ষ

বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর কনভয়ের ওপর হামলার ঘটনা সরাসরি উল্লেখ না করে তিনি বলেন, “ভিআইপি নাম করে কেউ কেউ ৩০-৪০ গাড়ির কনভয় নিয়ে যাচ্ছেন। এতে শুধু উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয় না, পাহাড় বা সমতলের রাস্তারও ক্ষতি হয়। আমি পুলিশকে কড়া নির্দেশ দিয়েছি, আমার কনভয়ে তিনটির বেশি গাড়ি থাকবে না।তিনি আরও বলেন, “আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দাঙ্গা বা বন্যার পরে যখন আপনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করেন, তখন তাঁদের অভিমানের বিস্ফোরণ ঘটে। কারণ, তখন তাঁরা সব কিছু হারিয়ে ফেলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তখন তাঁদের পাশে দাঁড়ানো দরকার, শান্তনা দেওয়া দরকার। আপনি যদি ৩০টা গাড়ি নিয়ে যান, তখন তারা আপনাকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করবে।”

কেন বন্যা হল?

উত্তরবঙ্গে কেন এত বড় বন্যা ঘটল, তাও ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “১২ ঘণ্টায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শুনেছি ভুটানের চারটে ড্যাম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই ড্যামে আর জল নেই। সব জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ৫৬টা নদী জল ছেড়েছে। সিকিমে ১৪টি হাইড্রোপাওয়ার প্লান্ট আছে। তাদের জন্য জল না থাকায় জল নামতে পারছে না। গ্রীষ্মকালে তিস্তা শুকিয়ে যায়, আর বর্ষাকালে প্লাবিত হয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ ফ্লোরিডাতেও ডুবে গেছেন। পাহাড়ে ভূমিকম্প বেশি হয়। এখানে পাহাড়-জঙ্গলও রয়েছে। জঙ্গলেও অনেক ক্ষতি হয়েছে।”

প্রশাসনের তৎপরতা

তিনি বলেন, “রবিবার ভোর ৫টায় আমার মুখ্যসচিব ও ডিজিপির সঙ্গে বৈঠক হয়। গৌতম (দেব) সকাল ৯টায় রিপোর্ট দিচ্ছেন, পুলিশ, ফায়ার, স্বাস্থ্য—সব বিভাগ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ, জরুরি বিভাগগুলোর সক্রিয়তা নিশ্চিত ছিল। বন্যার পরে প্রথম কাজ হলো আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করা। তারা আতঙ্কে ছিল, প্রশাসনের কাজ তাদের মানসিক ভরসা দেওয়া। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আমরা উত্তরবঙ্গে পৌঁছে গেছি।” তিনি আরও বলেন, “তাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল সমস্যা মেটানোর জন্য। এমন বহু ঘটনা হয়েছে যেখানে মা মারা গেছেন কিন্তু সন্তান বেঁচে আছে। এমন ৬-৭টি কেস এসেছে। আমরা যদি ওই সময় যেতাম, তাহলে প্রশাসনের সকলেই আমার সঙ্গেই ব্যস্ত থাকত। আমরা চাইনি প্রশাসন আমার সঙ্গে ব্যস্ত থাকুক। সেই মুহূর্তে ঠান্ডা মাথায় সমস্যা সমাধান করাই ছিল মুখ্য। আমরা যতটা পারি কথা বলেছি, ২১টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।”

Address

3721 2nd Street
Saltlake Sector V, Kolkata 700 091

Contacts

+91 98300 71925
Contract.subhendu.etv@gmail.com